শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

পর্যাপ্ত তেল মজুদ থাকা সত্ত্বেও বন্ধ হয়ে গেল ভেড়ামারা বিদ্যুতকেন্দ্র 

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

পর্যাপ্ত তেল মজুদ থাকা সত্ত্বেও বন্ধ হয়ে গেল ভেড়ামারা বিদ্যুতকেন্দ্র 

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য এখনো ৩৩ লাখ লিটার ডিজেল মজুত আছে যা দিয়ে কেন্দ্রটি প্রায়  ৬ মাস বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। 

জাতীয় গ্রিডে কোনরকম সমস্যা দেখা দিলে এই কেন্দ্রটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। জাপানি মেশিন হওয়ায় তা এখনো যথেষ্ট ভালো। কিন্তু উৎপাদন দক্ষতা কমে গেছে।  

মেয়াদোত্তীর্ণ মেশিন ও উৎপাদন খরচ ব্যয়বহুল হওয়ার কারণেই মূলত ঊর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষ  স্থায়ীভাবে কেন্দ্রটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তিনি মনে করেন।

কেন্দ্রটিতে বর্তমানে দায়িত্বরত রয়েছেন ৬২ জন কর্মচারী-কর্মকর্তা। যাদেরকে অন্যত্র কেন্দ্রে বদলি করতে বলা হয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এ নির্দেশনা দেয় বলে নিশ্চিত করেছেন আসাদুজ্জামান। 

বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ডিজেলে চলা ৬০ মেগাওয়াট  উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন  কেন্দ্রটির উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ২০২২ সালে দুটি ইউনিট বন্ধ করা হয়। এক ও দুই নম্বর ইউনিট ৪৬ বছর ধরে চলার পর বন্ধ করে দেয়া হয়। আর ৩ নম্বর ইউনিটটি ৪৪ বছর ধরে সচল আছে। সেটিও স্থায়ীভাবে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক ও দুই নম্বর ইউনিট বন্ধের পর প্রায় ২০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রে বদলি করা হয়েছে।  

তবে ২০২২ সাল থেকে তিন নম্বর ইউনিট থেকে কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা না হলেও কেন্দ্রটি রক্ষণাবেক্ষণ, ডিজেল খরচ, কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা বাবদ ২০২২ সালে সরকারের খরচ হয়ে গেছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। যার ফলে সরকার এখানে আর্থিক লোকশানের শিকার হচ্ছে। 

জানা গেছে, ভেড়ামারার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১৯৭৬ সালের ২৭ এপ্রিল জার্মানির এজি কার্নিস কোম্পানির প্রযুক্তিতে একটি জিট ইউনিট নিয়ে প্রথম উৎপাদনে আসে। একই বছরের ২৮ জুলাই দ্বিতীয় ইউনিট চালু হয়। সে সময় ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট থেকে মোট ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। চাহিদার কারণে ১৯৮০ সালের ১৯ জানুয়ারি জাপানের হিটাসি কোম্পানির প্রযুক্তিতে ২০ মেগাওয়াটের আরেকটি ইউনিট চালু করা হয়। তখন মোট সক্ষমতা দাঁড়ায় ৬০ মেগাওয়াট। 

আসাদুজ্জামান আরো বলেন, এটি বন্ধ করে অকশন দিয়ে জায়গাটি ক্লিয়ার করতে হবে। এখানে ৪ থেকে ৮ মেগাওয়াটের একটি সোলার প্যানেল (সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র) বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

টিএইচ